'হামে বহুত কম লাগি,হামদোনো নারাজ হুয়ে।'হামদোনো বলতে বক্তা কাসাভ আর তার সঙ্গী আবু ইসমাইল। কম বলতে ৭ জন শিশু এবং বেশ কয়েকজন মহিলা ও বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সমেত ৭২ জন নিরপরাধ মানুষ, যাদের ওরা দুজন মিলে খুন করেছিল হিমশীতল রক্তে। কাসভদের ছিনতাই করা জাহাজের যে সারেং কাসভের মুখে নিজের হাতে রান্না করা অন্ন তুলে দিয়েছিল সেই সারেংকে গলা কেটে জবাই করেছিল হাসতে হাসতে। জলের আর এক নাম জীবন। নিরবিচ্ছিন্ন হত্যালীলায় তৃষ্ণার্ত কাসভের দিকে কামা হাসপাতালের যে ওয়ার্ডবয়টি কাঁপতে কাঁপতে জলের গ্লাস তুলে দিয়েছিল, জল পান করে তাকেও ঝাঁঝরা করে জীবনের বিনিময়ে তার হাতে মৃত্যু তুলে দিয়েছিল কাসভ পুলকিত হৃদয়ে। এদের কারো সঙ্গে আবু ইসমাইল বা কাসভের সুদূরতম শত্রুতা ছিল না, চিনত না পর্যন্ত। তুকারাম ওম্বালে বন্দুকের নল চেপে ধরে নিজের শরীরটা ঝাঁঝরা হতে দিয়েও কাসভকে সঙ্গী কন্সটেবলদের হাতে না তুলে দিলে পরের গুলিটা আমাকে বা আপনাকে ইহলোকের সীমানা পার করে দিত। এমনিই। কাসাভের কালান্তক কালাশনিকভ কেড়ে নেবার পর ওখানে মজুত পুলিশ এবং জনতা কাসাভকে ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে দিতে পারত। করেনি,দেশের আইনের ওপর ভরসা রেখেছিল ঐ রক্তাক্ত বীভৎসতার মধ্যেও। তুকারাম মরতে মরতেও সঙ্গীদের বলে গিয়েছিলেন- 'উসে জিন্দা পাকড়না হ্যায়, মত মারনা।' তার ভরসা ছিল, রাষ্ট্র এই নরঘাতককে শাস্তি দেবেই। কিন্তু তার আগে হত্যাকারীর কাছে ষড়যন্ত্রের পূর্ণ চিত্র জানা দরকার। কান টেনে মাথার হদিস পাওয়া দরকার। তাই নিজের জীবন বিপন্ন করেও তাকে জীবিত রাখা প্রয়োজন।
এরপর বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তদন্ত ক্রমশঃ এগোতে লাগলে সংবাদমাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম তাদের অভিসন্ধি ছিল বেপরোয়া হত্যালীলা চালিয়ে ভয়াবহ ত্রাস সৃষ্টির পর তাজ এবং ওবেরয়ের অসংখ্য দেশি বিদেশি অতিথিকে নিজেদের জিম্মায় রেখে ভারত সরকারকে তাদের সামনে নতজানু হতে বাধ্য করা। গোয়েন্দা সংস্থার দ্বারা ট্যাপ করা তাদের মোবাইল কথোপকথন থেকে স্পষ্ট হল যে,তাদের ধারনা ছিল ভারত রাষ্ট্র দূর্বল। সুতরাং ভয় দেখিয়ে ভারত সরকারকে ব্ল্যাকমেল করার ব্যাপারে তারা পুরোপুরি নিশ্চিত ছিল। ইন্ডিয়ান এয়ার লাইন্সের বিমান ছিনতাই, কার্গিল অনুপ্রবেশ, মুফতি মহম্মদের কন্যা অপরহন ইত্যাদি বহু ঘটনায় বারবার এই প্রমাণ তারা অতীতে পেয়েছে। সুতরাং
বুঝতে অসুবিধা নেই ভারত রাষ্ট্রের দূর্বল চরিত্রই তাদের এই উচ্চাভিলাষের মূল উৎস।
তারা জানত দূর্বল চরিত্রের ভারতীয়দের দিয়ে ইচ্ছামত নিজেদের দাবীগুলো মানিয়ে নিজেদের দেশে ফিরে গিয়ে তারা বীরের সম্মান পাবে । তাদের ধারনাটা খুব একটা ভিত্তিহীন ছিল এমনও কিন্তু নয়। কারন, অতীত ঘাঁটলে দেখা যাবে ভারত রাষ্ট্রের এই দূর্বল চরিত্রই কান্দাহার কান্ড ঘটিয়ে মাসুদ আজহারকে মুক্ত করার সাহস জুগিয়েছিল। মুক্ত মাসুদ আজহার বাল্মীকিতে পরিণত তো হয়ইনি বরং ফের ষড়যন্ত্র করে করে বহু ভারতীয়কে হত্যা করতে সফল হয়েছে। উচ্চ আদালতে কাসভের লঘুতর দন্ড এদের মুখের হাসি আরও চওড়া করবে সন্দেহ নেই। নতুন আশা জোগাবে তাদের সহযোদ্ধার মুক্তির, আত্মবিশ্বাস জোগাবে দ্বিধাগ্রস্ত দূর্বল ভারতের বুকে আবার একটা নতুনতর হামলা চালানোর। চলবে আরও একটা কান্দাহার কান্ড জাতীয় ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা। আবার এক মৃত্যুর তান্ডবলীলার সামনে ভীত, নতজানু ভারতের জেল থেকে কাসভের মুক্তি ঘটিয়ে পাকিস্তানে নিয়ে গিয়ে বীরের মর্যাদা দেওয়া হলে আম ভারতীয় হয়তো এবার আর অবাক হবে না। এবং তারপর মাসুদ আজহারদের মতই মুক্ত কাসভ আবারও ভারতে নতুনতর নাশকতার পরিকল্পনার শরিক হওয়া তো সময়ের অপেক্ষা। অবিরাম চলতে থাকবে
আরও আরও হত্যা এবং হত্যাকারীর সামনে নতজানু হওয়ার দুষ্ট চক্র।
আরও আরও হত্যা এবং হত্যাকারীর সামনে নতজানু হওয়ার দুষ্ট চক্র।
কেউ কেউ বলছেন ফাঁসী দিলে কাসভ শহীদের মর্যাদা পেয়ে যাবে। তাতে আরও অনেকে ফিদায়েঁ জঙ্গী হওয়ার অনুপ্রেরণা পাবে। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না ২৬/১১-র হামলায় এমনিতেই ৯ জন 'শহীদ' হয়ে গেছে। কাসভের মৃত্যু নতুন করে তাদের অনুপ্রেরণা জোগাবে এমন সম্ভবনা কম। বরং কাসভ এই অবস্থা থেকে যদি জীবিত থেকে যায় বা কোনক্রমে মুক্তি পেয়ে যায় সেটাকেই তারা জেহাদের সাফল্য ভেবে উৎসাহিত হবার সম্ভবনা প্রবল। হয়তো জেহাদিরা দল ভারি করার জন্য তাদের নিজেদের কায়দায় প্রচার চালাবে, জেহাদে আল্লাহ তাদের সঙ্গে আছেন তাই কাফেররা হাতের মুঠোয় পেয়েও সাজা দিতে পারল না। সব থেকে যেটা খারাপ হবে, শতসহস্র নিষ্পাপ মুসলিম কিশোরকিশোরী বা তরুণতরুণীর সামনে কাসভের উদাহরন রেখে তাদের মগজ ধোলাই করে সন্ত্রাসবাদী হামলায় টেনে আনার চেষ্টা করা হবে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে,একজন জেহাদিকে মানুষের তৈরি আদালতে মানুষের তৈরি আইনে মানুষ কর্তৃক বিচার এবং মৃত্যুদন্ডদান, ধর্মের নামে জেহাদ এবং হত্যালীলা চালানোতে কোন ধর্মের কোন ঈশ্বরেরই সমর্থন নেই সেটা বুঝতে খানিকটা সাহায্য করতে পারে বৈকি।
এটা ঠিকই যে, মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের ৫ নং ধারায় বলা হয়েছে, "কাউকে নির্যাতন করা যাবে না; কিংবা কারো প্রতি নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণ করা যাবে না, অথবা কাউকে এহেন শাস্তি দেওয়া যাবে না।" কিন্তু ঐ ঘোষানাপত্রেরই ১১.২ ধারায় বলা হচ্ছে যে, "কাউকেই এমন কোন কাজ বা ত্রুটির জন্য দন্ডযোগ্য অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না, যে কাজ বা ত্রুটি সংঘটনের সময় জাতীয় বা আন্তর্জাতিক আইনে দন্ডনীয় অপরাধ ছিল না। দন্ডনীয় অপরাধ সংঘটনের সময় যে শাস্তি প্রযোজ্য ছিল, তার চেয়ে গুরুতর শাস্তিও দেওয়া যাবে না।"
সুতরাং এর থেকে এটা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় যে, ৫নং ধারাটি মূলত সাধারন মানুষ এবং রাষ্ট্র কর্তৃক বেআইনিভাবে মানবাধিকার উল্লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে করা হয়েছে। উদাহরন হিসাবে বলা যায়, গণআদালত বসিয়ে নির্যাতন, শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রছাত্রীদের নির্যাতন বা পুলিশ বা সেনাবাহিনীর দ্বারা কোন অপরাধে অভিযুক্ত অপরাধী অথবা সাধারন মানুষের ওপর দৈহিক অত্যাচার কিংবা হত্যার মত গুরুতর মানবাধিকার উল্লঙ্ঘনের রক্ষাকবচ হিসাবে এই ধারাটি রাখা হয়েছে। অপরদিকে যে সন্ত্রাসবাদী অসংখ্য নিরপরাধ মানুষের জীবিত থাকার অধিকার সহ সমস্ত মানবিক অধিকার সম্পূর্ণ হরন করেছে, তাকে প্রতিহত করা এবং একই সঙ্গে এই ধরনের ব্যক্তি মানবজাতির স্বার্থে সম্পূর্ণ অবাঞ্ছীত সেই সত্য প্রতিষ্ঠা করাও রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। ১১.২ ধারায় জাতীয় আইন অনুযায়ী এই ধরনের অপরাধীর বিচার এবং উপযুক্ত শাস্তিদানকে বৈধতা দিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ। একই সঙ্গে এটা উল্লেখ করা জরুরী যে এই ঘোষনাপত্রে কোথাও সরাসরি মৃত্যুদন্ডের বিরোধীতা করা নেই। কিন্তু অপরাধী যাতে আত্মপক্ষ সমর্থনের সমস্তরকম সুযোগ পায় তা নিশ্চিত করার কথা বলা আছে।সুতরাং রাষ্ট্রসঙ্ঘের ঘোষণাপত্রের ৫নং ধারাটি আসলে আমার আপনার মত ছা-পোষা সাধারন মানুষ যারা সবথেকে বেশি সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িক ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের শিকার হন তাঁদের মানবাধিকার রক্ষার কথাই বলতে চেয়েছে। এবং একই সঙ্গে যারা সেই মানবাধিকার উল্লঙ্ঘন করবে তাদের দেশের আইন অনুযায়ী শাস্তির কথাও বলা হয়েছে ঘোষণাপত্রটিতে।
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, ২০০৭ সালের ১৫ই নভেম্বর রাষ্ট্রসঙ্ঘে ইটালি ও চিলি যৌথভাবে যে সব দেশে প্রাণদন্ড চালু আছে, তাদের প্রাণদন্ড স্থগিত রাখার প্রস্তাব আনলে ৯৯টি দেশ তা সমর্থন করলেও ভারত সমেত ৫২টি দেশ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেয় ও ৩৩টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। মনে রাখা দরকার ঐ ৯৯ টি দেশের মধ্যে ৯৫টি দেশ ইতিমধ্যেই প্রাণদন্ড বিলোপ করেছে তাদের দেশে। অর্থাৎ নতুন করে মাত্র ৪ টি দেশ প্রাণদন্ড স্থগিত রাখার প্রস্তাবের স্বপক্ষে সায় দেয়। ঐ সালেরই ১৮ই ডিসেম্বর রাষ্ট্রসঙ্ঘের জেনারেল অ্যাসেম্বলিতে পুনরায় এই প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হলে প্রস্তাবের পক্ষে মোট ১০৪টি ভোট পড়ে ও বিপক্ষে ৫৪টি ভোট পড়ে।
এটা থেকে একটা জিনিস স্পষ্ট যে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মৃত্যুদন্ড বন্ধ করার প্রবণতা ক্রমবর্ধমান। কিন্তু পাশাপাশি এটাও না বললে নয় যে,আমেরিকা, ভারত, চিন, পাকিস্তান সমেত যে দেশগুলি মৃত্যুদন্ড তুলে দেওয়া বা স্থগিত রাখার বিপক্ষে সেই দেশগুলির মোট জনসংখ্যা যারা মৃত্যুদন্ড স্থগিত রাখতে চায় তাদের থেকে অনেক বেশি। খুব সম্ভবত জনসংখ্যার এই ব্যাপক চাপ এবং তার কারনে অপরাধ সংখ্যার ক্রমবর্ধনতা এই দেশগুলোর অধিকাংশের মৃত্যুদন্ড তুলে না দেওয়ার একটা বড় কারন। আবার এই দেশুগলোর কয়েকটি ধর্মীয় আইন দ্বারা চালিত যেখানে শাস্তি হিসাবে মৃত্যুদন্ড ও অঙ্গচ্ছেদ বিচারব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। শুধুমাত্র ২০০৯ সালেই চিনে এক হাজারের বেশি (অনেকের মতে সংখ্যাটা দশ হাজার) জনের, আমেরিকাতে ৫২ জন, এমনকি বাংলাদেশেও ৩জন ব্যক্তির মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। অন্যদিকে ভারতে ১৯৯৫ থেকে ২০১০ পর্যন্ত এই ১৫ বছরের মধ্যে ২০০৪ সালে ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় ছাড়া কারোর মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয় নি, যেখানে কাসভ সমেত ৫২ জন ব্যক্তির মৃত্যুদন্ড কার্যকর হওয়া সরকারি সম্মতি বা রাষ্ট্রপতির সম্মতির প্রতীক্ষায় ঝুলে রয়েছে।
সুতরাং, ভারত রাষ্ট্রসঙ্ঘে মৃত্যুদন্ড স্থগিত রাখার বিপক্ষে ভোট দিলেও ভারত সরকার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার ব্যাপারে বিভিন্ন কারনে দ্বিধাগ্রস্ত এটা সুস্পষ্ট। বিচারব্যবস্থা যে শাস্তি ধার্য করে তার ওপর রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ কতটা বাঞ্ছিত তা নিয়ে বিতর্ক আছে এবং তা প্রসঙ্গান্তরে আলোচনা করা যাবে। কিন্তু, কাসভের মৃত্যুদন্ড এমনকি উচ্চআদালত ধার্য করলেও শেষ পর্যন্ত কবে কার্যকর হবে বা আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ থেকেই যায়।
এটা আশাকরি সকলেই স্বীকার করবেন ২৬/১১র মত ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসবাদী হামলার বিচার করতে গিয়ে পৃথিবীর যে কোন দেশের আদালত সেই দেশের সর্বোচ্চ শাস্তিই দেবে। তা যাবজ্জীবন কারাদন্ডই হোক বা মৃত্যুদন্ড। কারন রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার অন্যতম স্তম্ভের মাধ্যমে রাষ্ট্রের নাগরিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীকে শাস্তি দেওয়া রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। রাষ্ট্র এটাও চাইবে তার আইনি কাঠামোর ওপর যে সাধারন নাগরিকরা ভরসা রাখেন তাঁদের সুবিচার প্রদান করে রাষ্ট্রের ওপর তাদের আস্থা এবং নিজের বৈধতা অটুট রাখতে। অর্থাৎ, দেশের সার্বভৌমত্ব এবং নাগরিকদের মানবাধিকারের ওপর আঘাতকে রাষ্ট্র যে বরদাস্ত করে না সেটা সে প্রমান করবে অপরাধিকে যথোপযুক্ত শাস্তিদানের মাধ্যমে। তাই যতদিন আমাদের দেশে মৃত্যুদন্ড সর্বোচ্চ শাস্তি হিসাবে থাকবে ততদিন কাসভের মত অপরাধীরা সেই শাস্তিই পাবেন। যদি ভবিষ্যতে কখনো আমাদের দেশে মৃত্যুদন্ডবিলোপ করা হয় তাহলেও হয়তো এই পর্যায়ের অপরাধীকে আমৃত্যু কারাগারে বন্দী জীবন যাপন করতে হবে (সেটা কতখানি মানবিক তা অবশ্য মৃত্যুদন্ড বিরোধী মানবাধিকার কর্মীরাই বলতে পারবেন), কারন যেকোন দেশের আইনে অত্যাচারীর থেকে অত্যাচারীতের, হত্যাকারীর থেকে হতর এবং তাদের সম্ভাব্য শিকারদের মানবাধিকারের গুরুত্ব অনেক বেশি।