Saturday, November 20, 2010

লোহা গরম হ্যায় - রেস্টোর ডেমোক্র্যাসি

                      লোহা গরম হ্যায় -রেস্টোর ডেমোক্র্যাসি
                                                                                                                                                                                   
যক্ষ যদি ধর্মপুত্রকে  আজকের দিনে ক্যুইজ করত-
১) কংগ্রেস কী চায়?
২) সিপিএম কী চায়?
৩) তৃণমূল কী চায়?
তার উত্তরগুলো সম্ভবতঃ যথাক্রমে এই রকম হত-
১) যে কোন প্রকারে কেন্দ্রের গদি টিকিয়ে রাখতে।
২) যে কোন প্রকারে পশ্চিমবঙ্গ নামক রাজ্যের গদি টিকিয়ে রাখতে।
৩) যে কোন প্রকারে সিপিএমকে পশ্চিমবঙ্গের গদি থেকে হঠাতে।
কংগ্রেস এমন একটা দল যে কেন্দ্রের মধু খেতে চিরকাল রাজ্যে চদু সেজে রইল। 'সেজে রইল' বলার বিশেষ কারন আছে। সাংবাদিক সম্মেলনে মানস ভুঁইঞা বললেন, রাজারহাটে জমি কেলেঙ্কারির তদন্ত বুদ্ধবাবু করুন। এক পরিচিত ভদ্রলোক কারনে অকারনে বলতেন, 'লাউ মানে কদু, যে না জানে সে চদু'কে না জানে হাফ বয়েল গৌতম সিদ্ধ হয়ে বুদ্ধ হয়েছিলেন। এবং আরও জানে
"জাহাজ-ক্যাপ্টেন তুমি ,বাকি সব মাঝি আর মাল্লা
সকলে জাঙ্গিয়া পরা, তুমি শুধু পরে আলখাল্লা"।
মানসও বিলক্ষণ জানেন। তবু বললেন, কারন রাজ্য কংগ্রেসের চদু সেজে থাকাই কেন্দ্রীয় সরকারের লাইফ ইনসিওরেন্স। স্টেপনিও বলা যেতে পারে। মমতা কাল যদি হঠা সিংজীর টায়ারের হাওয়া খুলে নেন স্টেপনি হয়ে নিজেকে তক্ষণা গুঁজে দেবে সিপিএম। তাইতো নীলোপল টুজি-র পরেও গদগদ মুখে সিংজীর মূলধনের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে ভোলেন না। চ্যানেলের পোষা সাংবাদিকটিও মনে করিয়ে দিতে ভোলেন না, সবই আসলে অভিযোগ মাত্র। জমি অধিগ্রহন প্রশ্নে শরিক নেতা কংগ্রেসের ম্যাচিওরিটি দেখতে পান। অবশ্য তর্কাচার্য্য মশাইদের পুঁথির বাইরের বাস্তব রাজনীতিতে সিপিএমের কংগ্রেসের মধ্যে মনের মানুষ খুঁজে পাওয়াটাই স্বাভাবিক।
দেথবেন, আচমকা পিছনে আলপিন ফুটলে লোকে 'বাবাগো' বলে চেঁচিয়ে ওঠে। বিপদে পরম নিকটাত্মীয়কে স্মরণ করবে বৈকি। মঙ্গলকোটে সিপিএমের কাছে হুড়কো খেয়ে তাই মানসপুত্র পরমপিতার কাছে 'বাঁচান স্যার' বলে কান্নাকাটি করলেন। উনি বিলক্ষণ জানতেন, তখনও যেহেতু পশ্চিমবাংলায় ঠিকঠাক বসন্তের আগমন ঘটেনি, তাই মরে গেলেও দিল্লী থেকে কোন কোকিলই বাঁচাতে আসবে না। ছানাকে কাকের বাসায় দিয়ে কোকিল দিল্লীর গুলবাগিচায় মশগুল হয়ে আছে। কাকের নিজরে ছানাপোনা যদি কোকিল ছানাকে খুঁচিয়ে মারে তাহলেও সে থোড়াই কেয়ার করে!
আজ বাংলায় বিরোধী রাজনীতির বসন্ত এসেছে। কুসুমাস্তীর্ণ নীপবনে তাই কুহু ডেকে যায় কোকিল। কিন্তু ছানা এখনও পুরনো কৃতজ্ঞতা ভোলে কী করে?  তাই মানসবাবুর ‌‌‌‍'স্টাডি' করার সময় চোখে ধরা পড়েনা
অধিগ্রহনের সময় জমির দাম কৃত্রিম ভাবে কম রাখার জন্য রাজারহাটে তিন বছর কোন রকম জমি কেনাবেচা বন্ধ রাখার কথা। ভুলে যান জনৈক ইট-ভাটা মালিককে গুন্ডা দিয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে জমি লিখিয়ে নেওয়া এবং তার পর তার নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়ার কাহিনী। কৃতজ্ঞতার ফিল্টারে গৌতমীর ঘোলা জল ওঁর কাছে স্বচ্ছতোয়া হয়ে যায়। কাদা গোলা পড়ে থাকে প্রদেশ কংগ্রেসের গায়ে।
এই নোংরা যেমন অসংখ্য প্রকৃত সিপিএম বিরোধী কংগ্রেস কর্মীকে গিলতে হয়। গিলতে হয় তৃণমূলকেও। দায়, পশ্চিম বাংলার বুক থেকে সিপিএম নামক বিষকৃক্ষের উখাতের। হয়তো সেই দায়ের জেরেই যে মমতা কফিন কেলেঙ্কারির জেরে মন্ত্রক ছেড়ে বেরিয়ে আসেন, টুজি স্ক্যামের পর তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর পাশে থাকতে হয়। জঙ্গলমহলে যৌথবাহিনীর আড়ালে হার্মাদ তান্ডবের প্রতিকার না পেয়েও আল্টিমেটাম দেওয়া
যায় না। বাংলা জুড়ে হত্যালীলার প্রতি কেন্দ্রের উদাসীনতা, অসংখ্য কর্মীর মৃত্যু দাঁত চেপে সহ্য করতে হয়। কারণ, তৃণমূল জানে শকুন ভাগাড়ের দিকে তাকিয়ে বসে আছে। সুযোগ পেলেই ঝাঁপিয়ে পড়বে।
তাই, কাকের যেসব মানসপুত্র/কন্যারা মাঝেমধ্যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ফেলছেন তাঁদের চিনে নেওয়ার ও বিচারের ভার রাজ্যের সিপিএম বিরোধী সাধারন মানুষের। জনগন জানেন, এখন লোহা গরম।